চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার এবং ৩৯টি উপকারিতা ও অপকারিতা

চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আমরা আজকে আলোচনা করব। কালোকেশী পাতার কার্যকর একটি জিনিস। এতে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উপাদান। আপনি যেমন বিভিন্ন হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন। ঠিক তেমনি কালোকেশী পাতার উপর আস্থা রাখতে পারেন।

চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার

কালোকেশী ব্যবহারের ফলে আপনার চুলকে করবে অনেক ঝলমলে এবং অনেক লম্বা। কালোকেশী ব্যবহার আমাদের চুলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই কালোকেশী পাতা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে। চলুন আজকে আমরা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে  আলোচনা করব।

পেজ সূচিপত্রঃচুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার এবং ৩৯টি উপকারিতা ও অপকারিতা

চুলের যত্নে কালোকেশী তেলের ব্যবহার

চুলের যত্নে কালোকেশী তেলের ব্যবহার সম্পর্কে আজ জানবো। কে না চায় যে তার চুলটা ঝলমলে করে রাখতে। কে না চায় তা চুলগুলো লম্বা, শক্ত আর বেশি কালো দেখতে। বিশেষ করে মেয়েরা এ বিষয়ে অনেক সচেতন। তারা তাদের চুলকে অনেক বেশি লম্বা এবং ঝলমলে করে রাখতে পছন্দ করে। এজন্য তারা বাজারে ব্যবহৃত বিভিন্ন হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে। যে প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করে তারা হয়তো সাময়িকভাবে কিছুটা হলেও চুলের বাড়তি যত্ন নিতে পারে। কিন্তু সেটা দীর্ঘমেয়াদি হয় না। 

যার কারণে চুল পড়া কোমার চাইতে,চুল বেশি পড়তে থাকে। এতে করা আপনার মাথার স্কিনের সমস্যা হতে পারে।এ সকল সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিতে পারেন। এতে করে আপনার বিভিন্ন সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে। আপনি যদি ঘরে বসে ঘরোয়া পদ্ধতিতে সঠিকভাবে কালোকেশী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে পারে অবশ্যই আপনার চুল ঝলমলে, লম্বা, শক্ত এবং কালো হবে। এতে করে আপনার স্কিনের কোন সমস্যা হবে না।

কারণ এটি প্রাকৃতিক উপাদান। মেয়েরা বেশি ব্যবহার করে থাকে। যাতে করে চুল দীর্ঘমেয়াদি ভাবে অনেক ঝলমলে এবং সুন্দর থাকে। কালোকেশী পাতা ব্যবহারের ফলে আপনার মাথা খুশকি চিরতরে হারিয়ে যাবে। এতে করে আপনার চুল এর গোড়া আরোও মজবুত হবে। তাই আপনি চাইলে খুব সহজেই ঘরে বসে কালোকেশী পাতার ব্যবহার করে চুলের যত্ন নিতে পারেন।

কালোকেশী তেলের ৩৯টি উপকারিতা ও অপকারিতা

কালোকেশী তেলের ৩৯ টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকে আলোচনা করব। শক্ত, মজবুত এবং ঝলমলে কালো চুল কেনা পছন্দ করে। সে কালোকেশী তেলের কিছু উপকারিতা যেমন আছে তেমন  অপকারিতা আছে। সেই সব বিষয়গুলো নিয়ে আজকে এই আর্টিকেল।

উপকারিতা

  1. খুশকি দূর করতে সাহায্য করে
  2. মাথা ত্বক হাইড্রেটেড রাখে
  3. চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
  4. চুলে পুষ্টি যোগায়
  5. চুলকে মসৃণ ও কোমল করে
  6. মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
  7. সেবোরিয়িক ডারমাটাইটিস প্রতিরোধ করে
  8. চলে শুস্কতা কমায়
  9. চুলের রং ধরে রাখতে সাহায্য করে
  10. প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের কাজ করে
  11. স্প্লিট এন্ডস প্রতিরোধ করে
  12. ফুলের আদ্রতা বজায় রাখে
  13. চুলের ডগা শক্তিশালী করে
  14. স্কাল্পে আরামদায়ক অনুভূতি দেয়
  15. মাথাব্যথা উপশমের সহায়তা করে
  16. চুলে ঘনত্ব বাড়ায়
  17. চুলে উজ্জ্বলতা বাড়ায়
  18. রাসায়নিক ডাইয়ের ক্ষতি কমায়
  19. চুলের গোড়া মজবুত করে
  20. চুল পড়া কমায়
  21. চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে
  22. অকালপক্কতা প্রতিরোধ করে
  23. এলোপেশিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে
  24. প্রাকৃতিক চুলের কালো রঙ ধরে রাখে
  25. চুলের পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় 
  26. চুলের ইলাস্টিসিটি বাড়ায়
  27. নিয়মিত ব্যবহারে চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে
  28. স্কাল্পের চুলকানি কমায়
  29. চুলের রুক্ষতা দূর করে
  30. চুল ভেঙ্গে যাওয়া রোধ করে
  31. নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে
  32. মাথা ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
  33. চুলে জট পড়া কমায়
  34. স্কাল্পে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধ করে
  35. মাথা ত্বকের প্রদাহ কমায়
  36. চুলের পুষ্টি শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়
  37. চুল পড়ার হার কম করে
  38. সূর্যের ক্ষতিকর রশ্নি থেকে চুলকে রক্ষা করে
  39. চুলের টেক্সচার উন্নত করে

অপকারিতা

  1. গন্ধ সহ্য না করতে পারলে বমি ভাব হতে পারে
  2. চোখে লাগলে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে
  3. চুলের রং পরিবর্তন হতে পারে
  4. সংক্রমণ থাকলে তেল ব্যবহার বিপদজনক হতে পারে
  5. গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এলার্জি হতে পারে
  6. শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেল চুল ভারী করে ফেলতে পারে
  7. অতিরিক্ত ব্যবহার স্কাল্পের পিএইচ নষ্ট হতে পারে
  8. অতিরিক্ত ব্যবহারে চুল তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে
  9. স্কাল্পে চুলকানি হতে পারে
  10. এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে
  11. অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করলে চুলের গড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে
  12. সংবেদনশীল ত্বকে ফুসকুড়ি সৃষ্টি করতে পারে
  13. গরম তেল ব্যবহার মাথার ত্বক পড়ে যেতে পারে
  14. সংরক্ষন না করলে তেলের মান নষ্ট হতে পারে
  15. রাসায়নিক মিশ্রিত তেল চুলের ক্ষতি করতে পারে
  16. চুলের ঘনত্ব কমে যেতে পারে
  17. খুশকি সমস্যা বেড়ে যেতে পারে
  18. মাথা ত্বকে ফাঙ্গাস ইনফেকশন হতে পারে
  19. বেশি সময় তেল লাগিয়ে রাখলে ময়লা জমতে পারে
  20. অতিরিক্ত ব্যবহারে চুল চিটচিটে হতে পারে
  21. মাথার ত্বকের সংবেদনশীলতায় চুল পড়া বাড়তে পারে
  22. দীর্ঘ সময় তেল রেখে দিলে চুল দুর্বল হতে পারে
  23. রং করা চুলে ব্যবহারে রংয়ের স্থায়িত্ব কমে যেতে পারে
  24. শিশুদের ক্ষেত্রে চোখে প্রবেশ করলে সমস্যা হতে পারে
  25. কিছু ক্ষেত্রে ত্বকের সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে
  26. স্কাল্পে গরম তেল ব্যবহারে ফসকা পড়তে পারে
  27. পাতলা চুলে তেল লাগালে চুল আরও পাতলা দেখাতে পারে
  28. কিছু ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে
  29. চুলের স্বাভাবিক তেল উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে
  30. চুলের পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হতে পারে
  31. দীর্ঘমেয়াদে স্কাল্পের রোমকূপ বন্ধ হতে পারে
  32. নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে
  33. দীর্ঘ মেয়াদে চুলের গঠন দুর্বল হয়ে যেতে পারে
  34. চুলের প্রাকৃতিক উজ্জলতা কমে যেতে পারে
  35. মাথায় ব্যাকটেরিয়া ও ধুলাবালি আটকে যেতে পারে
  36. সংরক্ষিত তেল থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে
  37. গরম আবহাওয়ায় তেল ব্যবহারে স্কাল্পে অতিরিক্ত ঘামতে পারে
  38. দেরিতে ধোয়া হলে চুলে শুষ্কতা বেড়ে যেতে পারে
  39. অন্য চুলের পণ্যের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া হতে পারে

কালোকেশী পাতার তেল তৈরি করার নিয়ম

কালোকেশী পাতা তেল তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে ভালো করে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে হবে। আমাদের সবচেয়ে সৌন্দর্য জিনিস হচ্ছে মাথা চুল। যদি চুল না থাকে তাহলে একজন মানুষকে দেখতে মোটেও ভালো লাগেনা। তাই আমরা চুলের যত্নে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার থাকি। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে গিয়েও শরণাপন্ন হয়। কিন্তু কোনভাবেই চুল পড়া বন্ধ করতে পারি না। আজ আমরা জানবো চুল পড়া বন্ধে কিভাবে কালোকেশী তেল তৈরি করা যায়।

কালোকেশী তেল তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে জবা, মেথ, আমলকি এবং কালোকেশী পাতা সংগ্রহ করতে হবে। যদি কালোকেশী পাতা না পান।তাহলে কালোকেশী গুড়া ব্যবহার করতে পারেন। এরপর এগুলো একসঙ্গে নিয়ে বেটে নিতে হবে বা বিলিন্ডারে পেস্ট করে নিতে পারেন। এরপর পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিবেন। নারকেল তেলের সাথে পেস্টে গুলো ভালো করে মিকচার করেন। এরপর চুলাতে সেগুলো ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ৫ মিনিট মতো ঝাল দিয়ে নামিয়ে নিবেন।

এরপরে সেটাকে ঠান্ডা করে কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করবেন। এতে করে আপনি অনেকদিন পর্যন্ত কালোকেশী তেল ব্যবহার করতে পারবেন। কালোকেশী তেল সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করবেন। ব্যবহার করার সময় আধা ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। দেখবেন আপনার চুল অনেক ঝলমলে সুন্দর ও সিল্কি লাগবে। তো আশা করি আপনি কালোকেশী পাতার তেল কিভাবে তৈরি করা যায় সে বিষয়ে জানতে পারলেন।

চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার পদ্ধতি

চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার পদ্ধতি জেনে নিব। চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা উপাদান। প্রতিটি মানুষই তার সৌন্দর্যের জন্য চুলের যত্ন করে থাকে। কারণ আপনার মাথায় যদি চুল না থাকে তাহলে আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় লজ্জায় পড়তে হয়। যার কারণে প্রতিটি মানুষ চুলে যত্ন নেই। বিশেষ করে মেয়েরা এ বিষয়ে বেশি সজাগ থাকে। কালোকেশী পাতা ব্যবহারে আপনার চুল হয়ে যায় ঝলমলে শক্ত মজবুত । কালোকেশী পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান। আপনি আয়ুর্বেদিক হিসেবে বলতে পারেন। বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রেও এ পাতা অনেক উপকার করে থাকে। তাহলে জেনে নেয়া যাক কালোকেশী পাতার ব্যবহার।

খুশকি রোধে ব্যবহার

কালোকেশী পাতা খুশকি রোধে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনার মাথায় যদি খুশকি থাকে তাহলে আপনাকে আধা ঘন্টা আগে পেস্ট এর সাথে একটু লেবুর রস মিশিয়ে নিবেন। এরপর মাথায় লাগিয়ে নিতে হবে। আধা ঘন্টা পর মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার মাথায় খুশকি চলে যাবে।

কালোকেশী হেয়ার মাস্ক

কালোকেশী হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন চুল পড়া রোধ করার জন্য। অনেকেই চুল পড়ে যায়। যার কারণে আপনি কালোকেশী হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে কালোকেশী পাতা না পেলে পাতার গুড়া, নারকেল তেল, ডিমের কুসুম, টক দই এগুলোকে ভালো করে মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক তৈরি করে নিবেন। সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করবে দেখবেন আপনার অনেক উপকার  আসবে।

শাম্পু করার আগে ব্যবহার

শ্যাম্পু করার ফলে আপনার চুলের রুক্ষতা বেড়ে যায়। এজন্য আপনি পেস্ট শ্যাম্পু করার এক ঘন্টা আগে ভালো করে মাথায় লাগিয়ে নিন। এরপর আপনি সময় মত ধুয়ে নিবেন। দেখবেন আপনার চুল অনেক রুক্ষতা দূর করে চুল হবে একদম মসৃন ও ঝলম্মলে।

কালোকেশী হেয়ার প্যাক

কালোকেশী পাতার জন্য হেয়ার প্যাক বানানোর কিছু প্রাকৃতিক উপাদান প্রয়োজন হয়। যেগুলো আপনাকে সংগ্রহ করে রাখতে হবে। জেনে নেই সেগুলো কি।

  • কালোকেশী পাতা, যদি না পান তাহলে কালোকেশী পাতার গুড়া
  • পরিমাণ মতো নারকেল তেল
  • আমলকি
  • জবা
  • মেথি

এগুলো সঠিক মিশ্রণ করে ভালো করে পেস্ট করে নিন। এরপর আপনি হেয়ার প্যাক ব্যবহার করলে আপনার চুল অনেক সুন্দর এবং সিল্কি হবে। 

ঘরোয়া ভাবে কালোকেশী তৈরির পদ্ধতি

ঘরোয়া ভাবে কালোকেশী তৈরির পদ্ধতি জেনে নিব। কালোকেশী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। বহু যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাহলে কালোকেশী ব্যবহারে ফলে আপনার মাথা চুলের সকল সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমে যায়। কালোকেশী হেয়ার প্রোডাক্ট বাজারে অনেক পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলো চাইতে ঘরোয়া ভাবে যদি আপনি তৈরি করতে পারেন। তাহলে সেগুলো অনেক ভালো কাজে দেয়। তাই আপনি যদি ঘরোয়া ভাবে কালোকেশী তেল তৈরি করতে চান তাহলে জেনে নিন কিভাবে এটি তৈরি করা যায়।

প্রথমে আপনাকে কালোকেশী পাতা নিতে হবে। সেগুলোকে ভালো করে ধুয়ে নেবেন। যাতে করে কোন ময়লা না থাকে। এরপর কালোকেশী পাতা বেটে নিবেন। প্রয়োজনে ব্লেন্ডার করে নেবেন। যাতে করে অনেক সুন্দর ভাবে পেস্ট হয়ে যায়। আর মসৃন না হলে সামান্য পরিমাণ পানি নিবেন। দেখবেন আপনার পাতাগুলো সুন্দরভাবে পেস্ট হয়ে গেছে। এবার পেস্টের সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে নেবেন। ভালোভাবে মিকচার করার পর একটি কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করতে পারেন।

বেশি দিন সংরক্ষণ করার জন্য আপনি এটি ফ্রিজে রাখতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করুন।ব্যবহার করার সময় পেস্ট করা কালোকেশী পাতা আধা ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন। আধাঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে দেখবেন এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে আপনার চুল ঝলমলে শক্ত মসৃন ও সিল্কি হয়ে যাবে। আপনার চুলের যাবতীয় সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে।

নিয়মিত কালোকেশী ব্যবহারে যে সব সুফল পাওয়া যায়

নিয়মিত কালোকেশী ব্যবহারে যে সব সুফল পাওয়া যায় তা জানবো। চুলের যত্নে প্রাকৃতিক নিয়মে কালোকেশী পাতার ব্যবহার যুগ যুগ ধরে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ আগের সময় বাজারে এত হেয়ার প্রোডাক্ট পাওয়া যেত না। তাই আগের মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান থেকেই চুলের যত্ন নিতো। এখনো সেই নিয়মগুলো রয়ে গেছে। কারণ বিশেষ করে গ্রামের মানুষ গুলো কালোকেশী পাতা ব্যবহার করে থাকে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। যেগুলো ব্যবহার করলে আপনার সাময়িক চুলের উপকার আসে।

কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদি ভাবে কোন উপকার আসে না। বাজারের প্রোডাক্ট গুলোতে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল যুক্ত থাকে। যার ফলে চুলের উপকার না করে ক্ষতি করে থাকে।আমরা জানবো কালোকেশী ব্যবহারে যেসব সুফল গুলো পাওয়া যায়। আপনি যদি কালোকেশী নিয়মিতভাবে ব্যবহার করেন। তাহলে পরে আপনার চুল পড়া রোধ করবে। চুলের আগা ফেটে যায় সেটা রোধ করবে। এবং তার সাথে চুলকে করবে অনেক সুন্দর ঝলমলে এবং স্বাস্থ্যউজ্জল চুল। কালোকেশী ব্যবহারের ফলে আপনার মাথা রক্ত সঞ্চালনের পরিমাণ বৃদ্ধি করবে।

এতে করে আপনার মাথা অনেক ঠান্ডা রাখে। আর এতে করে চুলের গড়া শক্ত করে চুল অনেক ঘন ও সুন্দর করে তোলে। তাছাড়া কালোকেশী ব্যবহারের ফলে মাথার খুশকি দূর করে। কালোকেশী ব্যবহারে আপনার চুলের রং ধরে রাখতে অনেক সহায়তা করে। কারণ অনেকে চুল ফেসকে বা লালচে ভাব দেখা যায়। কিন্তু যদি আপনি কালোকেশী নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুল অনেক কালো এবং ঝকঝকে দেখা যায়। তাই আমি বলব আপনারা যদি নিয়মিত ভাবে কালোকেশী ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার চুলে সকল সমস্যাগুলো দূর হবে বলে আমি মনে করি।

কালোকেশী গাছ কিভাবে চিনবেন

কালোকেশী ব্যবহার করেন অনেকে কিন্তু এর গাছ অনেকে নাও চিনতে পারেন। তাই আমরা জানবো আজকে কালোকেশী গাছ চেনার উপায়। কালোকেশী গাছ বিশেষ করে বিভিন্ন বন জঙ্গল ঝোপঝাড়ে জন্মে থাকে। বাংলাদেশে সহ বিভিন্ন দেশে এই গাছ পাওয়া যায়। এ গাছ সাধারণত তিন থেকে পাঁচ ফিট মত লম্বা হয়ে থাকে। এই গাছটি দেখতে অনেকটাই সরু এবং শাখা প্রশাখা যুক্ত একটি গাছ। কালোকেশী গাছ অনেকটা রুক্ষ ও মসৃণ এবং সবুজ রঙয়ের হয়ে থাকে। তাছাড়া এটি অনেকটা খাজকাটা আকৃতির হয়ে থাকে।

কালোকেশী গাছে ফুল গুচ্ছ ভাবে ফোটে থাকে।কালোকেশী গাছের ফুল গুলো মৌসুম ভেদে বিভিন্ন রঙয়ের হয়। এ গাছের ফুল ছোট এবং হলুদ বা সাদা বর্ণের হয়ে থাকে। কালোকেশী গাছের ফুলের কারনে এর পরিচিতি ফুটে উঠে। এই গাছের ফল গুলো কালো হয়। আবার অনেক সময় এটি দেখতে সাদা বা হলুদ রঙয়ের হয়ে থাকে। কালোকেশী গাছের ফল ছোট সাইজের হয়। বর্ষাকালে হলুদ রঙয়ের ফুল হয় এবং শরৎকালে ফল হয়। কালোকেশী গাছের পাতা দেখতে লম্বাটে, খসখসে ও অমসৃন হয়ে থাকে।
চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার

মশা নিধনে কালোকেশী পাতার ব্যবহার

মশা নিধনে কালোকেশী পাতার ব্যবহার অনেক কার্যকারী ভূমিকা রাখে। মশা প্রতিটি মানুষের জন্য বিপদজনক। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে মশার উৎপাত বেশি হারে বেড়ে যায়। এ মশার কামড়ে অনেক মানুষের বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা যায়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। এই ডেঙ্গু জ্বর একবার কারো শরীরে বাসা বাঁধলে তা ভালো হতে অনেক সময় লাগে। আর ডেঙ্গু জ্বরের কারণে শরীর কে ফুলিয়ে তোলে। এমনকি এই ডেঙ্গু জ্বরের কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে।

তাই আমাদেরকে এই মশা নিধন করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আপনি হয়তো বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের মশার কয়েল ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু সে কয়েল ব্যবহার করার ফলে অনেক ক্ষতি সম্মুখীন হতে হয়। বাচ্চাদের জন্য শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট হয়। আপনারা যদি কালোকেশী পাতার রস পরিমান মত পানিতে মিশিয়ে নিয়ে ঘরে এবং ঘরের বাইরে স্প্রে করে দিতে পারেন। তাহলে খুব সহজে মশা নিধন করতে পারবেন। আর মশা নিধনে কালোকেশী পাতা অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

খুশকি দূর করতে কালোকেশী পাতার ক্ষমতা

খুশকি দূর করতে কালোকেশী পাতা ক্ষমতা অনেক। কারণ কালোকেশী পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান। প্রতিটি মানুষের সৌন্দর্যের দিকে তাকালে সবার আগে চুল চোখে পড়ে। কারন এই চুলের কারণে আপনার চেহারা দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। কিন্তু এই চুলি যদি আপনার অনেক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে আপনার জন্য অনেক টেনশনের কারণ। বিশেষ করে খুশকি আপনার চুলের জন্য অনেক সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়ায়। আপনার খুশকি দূর করার জন্য বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন।

এরপরও হয়তো আপনার চুলের থেকে খুশকি দূর হয় না। যখন ব্যবহার করেন তখন দূর হয়। পরবর্তীতে আবার খুশকি চলে আসে। এই খুশকি থেকে চিরতরে বাঁচার জন্য প্রাকৃতিকভাবে কালোকেশী পাতা ব্যবহার করতে পারে। একটি প্রাকৃতিক উপাদান গ্রামের মেয়েরা বেশি ব্যবহার করে থাকে। কালোকেশী পাতা পেস্ট করে নেবেন এবং এর সাথে অল্প পরিমাণ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন।

এরপরে পেস্ট গুলো আপনার মাথায় ভালো করে মাখিয়ে নিবেন। আধা ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে মাথা পরিষ্কার করে নেবেন। নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন আপনার চুল থেকে খুশকি চিরতরে হারিয়ে যাবে এবং আপনার চুলের গোড়া অনেক শক্ত এবং চুল লম্বা করতে অনেক সাহায্য করবে।

কালোকেশী পাতার রসের ঔষধি গুনাগুন

কালোকেশী পাতার রসের ঔষধি গুনাগুন অনেক। কালোকেশী পাতার রস শুধুমাত্র যে চুলের যত্নে ব্যবহার করবেন তা নয়। এটি একটি প্রাকৃতিক উপাদানে ভরপুর। যাকে আমরা আয়ুর্বেদিক হিসেবেও পরিচিতি দিতে পারি। কারণ এটি বিভিন্ন রোগের জন্য অনেক উপকারী একটি গাছ। এই গাছে সবকিছুই উপকারে আশে। এই গাছের কাণ্ড, পাতা, ফুল, ফল সব কিছুই বিভিন্ন রোগের জন্য ব্যবহার করে থাকে। আগের সময় অনেক ডাক্তার ছিল না। অনেক ওষুধ ছিল না। বিভিন্ন কবিরাজ গাছগাছা থেকে পাতা রস খেয়ে অসুখ ভালো করে দিত।

কালোকেশী পাতা পেটে কৃমি ভালো করতে অনেক উপকারে আসে। বিশেষ করে এই পাতার রস পেটের অসুখের জন্য অনেক উপকারী। তাছাড়া আপনার যদি কোন জায়গা কেটে যায়। সে কাটা অংশে রক্ত বন্ধ করার জন্য কালোকেশী পাতার রস কাজে আসে। এবং এটি ব্যবহারে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। কালোকেশী পাতা ডায়াবেটিস রুগির জন্য অনেক উপকারি। এই গাছের পাতার রস খেলে রক্তে শর্করা পরিমান অনেক কমে যায়।  তাছাড়া বিভিন্ন ঘা বা ক্ষতস্থান কালোকেশী পাতার রস বেটে দিলে খুব সহজেই সেরে যায়।

কালোকেশী পাতা কিডনি কর্ম ক্ষমতার জন্য অনেক গুরুত্ত্ব রাখে। বিশেষ করে কিডনিতে পাথর হলে চিকিৎসা নিতে সাহায্য করে। অনেক সময় খুসখুসে কাশি ভালো হতে চাই না। এই খুশখুশে কাশি ভালো করার জন্য কালোকেশী পাতার রস খেলে দ্রুত ভালো হয়ে যায়। তাছাড়া রক্ত পরিষ্কার করতে অনেক ভূমিকা রাখে। তাই কালোকেশী পাতার অনেক গুনাগুন রয়েছে। এ পাতা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বিভিন্ন রোগ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন।
চুলের যত্নে কালোকেশী ব্যবহার

শেষ কথা 

চুলের যত্নে কালোকেশী পাতা যে গুনাগুন তা সম্পর্কে অনেক ধারনা পেলেন। শুধুমাত্র চুলে যত্নের জন্যই যে কালোকেশী ব্যবহার হয় তানা বিভিন্ন রোগের ওষুধের জন্য একটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আপনারা এতক্ষন উপরের আর্টিকেল থেকে পড়ে নিশ্চয় বুঝতে পারলেন যে এই পাতা গুনাগুন সম্পর্কে। কালোকেশী পাতা পেটের অসুখ আর বিভিন্ন কাঁটাস্থান, ঘা, কিডনির সমস্যা বা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বা শরীরের রক্ত পরিষ্কার রাখতে রক্তের সঠিক গঠন রাখতে এই কালোকেশী পাতা অনেক ভূমিকা রাখে।

আপনাদের কারো কোন সমস্যা হলে কালোকেশী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। আমি আশা করি চুলের যত্নে কালোকেশী পাতার ব্যবহার,গুনাগুন,উপকারিতা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।পরিশেষে বলতে চাই আমার এই আর্টিকেল পড়ে যদি কোন উপকার পেয়ে থাকেন। তাহলে আপনার নিকট বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে ভুলবেন না। যাতে করে আপনার বন্ধুরাও চুলের যত্নে ও অন্য রোগের জন্য কালোকেশী পাতা ব্যবহার করে উপকৃত হয়।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শেষ কথা বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url